দলীয় সূত্র জানায়, চলতি বছরের অক্টোবরেই অনুষ্ঠিত হতে পারে ক্ষমতাসীন দলটির ২১তম সম্মেলন।
সারাদেশের তৃণমূল থেকে উঠে আসা সিনিয়র নেতাকর্মীরা তাদের নতুন নেতৃবৃন্দদের দেখার অপেক্ষায় আওয়ামী লীগের সম্মেলনের দিকে তাকিয়ে রয়েছেন।
বিশেষ করে সম্মেলনকে সামনে রেখে দলের সাধারণ সম্পাদকের পদটি পেতে দলের বিভিন্ন অনুষ্ঠানে সক্রিয় অংশগ্রহণের পাশাপাশি অন্যান্য নেতাদের সাথে নিবীড় যোগাযোগ রেখে চলেছেন সম্ভাব্য প্রার্থীরা।
দলের অভ্যন্তরীণ সূত্র জানায়, বর্তমান সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের হঠাৎ করে অসুস্থ হয়ে পড়া সাধারণ সম্পাদক পদটির জন্য অন্য নেতাদের কাছে একটা সুযোগ হয়ে এসেছে।
আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতারা জানান, ওবায়দুল কাদেরের সেরে উঠতে দীর্ঘ সময়ের প্রয়োজন হওয়ায় তার পক্ষে দলের সাধারণ সম্পাদক পদের পাশাপাশি মন্ত্রণালয় ধরে রাখা কঠিন হয়ে যাবে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে দলের একজন প্রেসিডিয়াম সদস্য ইউএনবিকে বলেন, কাদেরের জন্য সবচেয়ে ভালো হবে দীর্ঘ সময়ের জন্য এসব দায়দায়িত্ব থেকে দূরে থাকা।
তবে সম্মেলনকে সামনে রেখে দলের ভেতর-বাইরে সবচেয়ে আলোচিত বিষয় হলো সাধারণ সম্পাদক পদ। যে পদে ওবায়দুল কাদেরই থাকছেন নাকি আসছে কোনো নতুন মুখ।
ওবায়দুল কাদের না থাকলে দলের দু’জন যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও দু’জন সাংগঠনিক সম্পাদকই হবেন ওই পদের জন্য সম্ভাব্য চার প্রার্থী। কারণ তাদেরকে গত একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে দলীয় মনোয়ন না দিয়ে নির্বাচন মনিটরিংয়ের দায়িত্ব দেয়া হয়েছিল।
সম্ভাব্য ওই চারপ্রার্থী হলেন- যুগ্ম সাধারণ সম্পাদকদ্বয় আব্দুর রহমান ও জাহাঙ্গীর কবির নানক এবং সাংগঠনিক সম্পাদকদ্বয় বিএম মোজাম্মেল হক ও এএফএম বাহাউদ্দিন নাসিম।
যোগাযোগ করা হলে যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আব্দুর রহমান বলেন, নেতাকর্মীরা আওয়ামী লীগের সম্মেলনের জন্য অধীর আগ্রহে অপেক্ষা করছে।
‘দলের সভাপতি শেখ হাসিনা ইতিমধ্যে চলতি বছরের শেষের দিকে সম্মেলনের ব্যাপারে তার সম্মতির কথা জানিয়েছেন। তিনি (শেখ হাসিনা) যথাসময়েই সম্মেলন চান,’ যোগ করেন তিনি।
উপজেলা নির্বানের পর সম্মেলনের জন্য পুরোদমে কার্যক্রম শুরু করা হবে জানিয়ে আব্দুর রহমান আরও বলেন, সম্মেলনের ঘোষণায় নেতাকর্মীদের মধ্যে উৎসবমুখর পরিবেশ এনে দিয়েছে।
বাহাউদ্দিন নাসিম বলেন, উপমহাদেশে আওয়ামী লীগ অন্যতম বড় রাজনৈতিক দল হওয়ায় দেশের জন্য আওয়ামী লীগের সমম্মেলন খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।
দলের গঠনতন্ত্র অনুসারে প্রতি তিন বছর পর সম্মেলন হওয়ার কথা জানিয়ে তিনি বলেন, নতুন নেতৃত্বের জন্য সম্মেলন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। পাশাপাশি দলকে সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী করার জন্যও সম্মেলন গুরুত্বপূর্ণ।
এদিকে উল্লিখিত চারজন ছাড়াও ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক খাদ্যমন্ত্রী ড. মুহাম্মাদ আব্দুর রাজ্জাকও দলের সাধারণ সম্পাদক পদটির জন্য সম্ভাব্য প্রার্থী।
তবে সম্ভাব্য প্রার্থী যে বা যারাই থাকুক না কেন সারা দেশের কাউন্সিলররা (ভোটার) চলতি বছরের শেষের দিকে সম্মেলনের মাধ্যমে তাদের নতুন নেতৃত্ব ঠিক করবেন।
কাউন্সিলররা সাধারণত দলের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক নির্ধারণ করেন। পরবর্তীতে দলীয় প্রধান অন্যান্য পদে অন্যদের নাম মনোনয়ন দেন।
প্রসঙ্গত, ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের সর্বেশেষ সম্মেলন ২০১৬ সালের ২৩ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হয়ে। ওই সম্মেলনের মাধ্যমেই প্রথমবারের মতো দলের সাধারণ সম্পাদক হন ওবায়দুল কাদের।